যে কোন সময় সিলেটে হতে পারে ভয়াবহ ভূমিকম্প।

ভয়াবহ ভূমিকম্পের আশঙ্কা: কারণ ও প্রস্তুতি

সিলেট অঞ্চল ভূমিকম্পপ্রবণ একটি এলাকা হিসেবে পরিচিত। এ অঞ্চলের ভূ-তাত্ত্বিক গঠন এবং একাধিক সক্রিয় ফল্ট লাইন, বিশেষত ডাউকি ফল্টের অবস্থান, সিলেটকে উচ্চ ভূমিকম্প ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পরিণত করেছে।

ভূমিকম্প


কেন সিলেট ভূমিকম্পপ্রবণ?

সিলেট বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত এবং এটি ভারতীয় ও ইউরেশীয় প্লেটের সীমানার নিকটবর্তী। এই দুটি টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষের কারণে এই অঞ্চল ভূমিকম্পের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ডাউকি ফল্ট লাইন সক্রিয় থাকার কারণে সিলেটে মাঝারি থেকে বড় মাত্রার ভূমিকম্প যে কোনো সময় ঘটতে পারে।

ভূমিকম্পের সম্ভাব্য প্রভাব

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলে সিলেট নগরীর ৮০% বহুতল ভবন ধসে পড়তে পারে। কারণ, সিলেটের বেশিরভাগ ভবন ভূমিকম্প প্রতিরোধী নকশা মেনে নির্মিত হয়নি। অতীতের ভূমিকম্পের রেকর্ড অনুযায়ী, ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ভূমিকম্প

সিলেটে ২০২১ সালে মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে ১০টি ছোট আকারের ভূমিকম্প ঘটে। এগুলোর উৎপত্তিস্থল ছিল ডাউকি ফল্টে। ২০২৩ সালেও ৪.৩ থেকে ৪.৫ মাত্রার একাধিক ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, যা বড় আকারের ভূমিকম্পের পূর্বাভাস হতে পারে।

প্রস্তুতির অভাব

সিলেট সিটি করপোরেশন ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করলেও যথাযথ প্রস্তুতি ও জনসচেতনতার অভাবে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হয়নি। শহরের অপ্রস্তুত অবস্থা এবং নাগরিকদের সচেতনতার অভাব বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।


প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ

1. জনসচেতনতা বৃদ্ধি: ভূমিকম্পকালীন করণীয় সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করতে প্রচারণা চালানো।

2. ভবন নির্মাণের মান উন্নয়ন: নতুন ভবন নির্মাণে ভূমিকম্প প্রতিরোধী প্রযুক্তি ও নকশা নিশ্চিত করা।

3. সরকারি উদ্যোগ: সিলেট সিটি করপোরেশন এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর জরুরি পরিকল্পনা গ্রহণ এবং তা কার্যকর করা।

4. জরুরি সেবার প্রস্তুতি: দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য প্রশিক্ষিত কর্মী ও সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা।

সিলেট একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপূর্ণ শহর হলেও এর ভূমিকম্প ঝুঁকি নগরবাসীর জন্য বড় ধরনের হুমকি। এই ঝুঁকি মোকাবিলায় সকলের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। সময় থাকতেই সচেতনতা বৃদ্ধি ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, যাতে বিপর্যয় এড়ানো যায়।

আপনার যদি এই নিবন্ধে কোনো বিশেষ তথ্য বা পরিবর্তন দরকার হয়, জানাতে পারেন।


সিলেট অঞ্চল ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে, যা বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে সতর্ক করে আসছেন। এ অঞ্চলে একাধিক সক্রিয় চ্যুতি (ফল্ট) লাইন রয়েছে, বিশেষ করে ডাউকি ফল্ট, যা সিলেটকে ভূমিকম্পপ্রবণ করে তুলেছে। 


২০২১ সালের মে মাসে সিলেটে ১০ দিনের ব্যবধানে ১০টি ভূমিকম্প হয়েছিল, যার উৎপত্তিস্থল ছিল ডাউকি ফল্ট। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ৪.১৯ মাত্রার ভূমিকম্পও এই ফল্টের কাছাকাছি ঘটেছে। 


বিশেষজ্ঞদের মতে, সিলেটের প্রায় ৪২,০০০ ভবনের ৭৪.৪ শতাংশই ভূমিকম্পের কথা বিবেচনা না করে নির্মিত হয়েছে। ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলে নগরীর ৮০% বহুতল ভবন ভেঙে পড়তে পারে। 


সিলেট সিটি করপোরেশন ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করলেও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে অর্থসংকট ও জনসচেতনতার অভাবের কারণে উদ্যোগগুলো বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে, ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবেলায় কার্যকর প্রস্তুতি গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে। 


সর্বশেষ ২০২৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সিলেটে ৪.৩ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, যার কেন্দ্রস্থল ছিল ভারতের মেঘালয় রাজ্যে। 


সিলেটের ভূমিকম্প ঝুঁকি মোকাবেলায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। নগরবাসীর সচেতনতা বৃদ্ধি, ভবন নির্মাণে সঠিক নকশা ও নিয়ম মেনে চলা, এবং সিটি করপোরেশনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এ ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হতে পারে।



No comments

Powered by Blogger.

copyright(c)2020Leading24 BD All Rights Reserved